গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের রসুলপুর বালুপাড়া গ্রামে প্রবাসী সাফিউল ইসলামের মৃত্যুর পর থেকে চলছে শোকের মাতম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়, হাস্যোজ্জ্বল এই তরুণের অকাল মৃত্যুতে গোটা গ্রাম নেমে এসেছে শোকে।

মারা যাওয়া সাফিউল আলম,ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয় সূত্র জানায়, দিনমজুর বাবার সংসারে বেড়ে ওঠা সাফিউল পরিবারের সচ্ছলতার আশায় গত বছরের ১ মে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ ও স্থানীয়ভাবে আরও এক লাখ টাকা সুদের ওপর ধার নিয়ে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব যান। সেখানে গিয়ে চাকরি না পেয়ে চরম হতাশায় পড়েন। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ মিলেনি।
পরিবারের ভাষ্যমতে, জীবিকার জন্য তিনি কখনো মসজিদে খাবার চাইতেন, কখনো রাস্তায় বা ফ্লাইওভারের নিচে রাত কাটাতেন। প্রায় ১৫ মাস এই অবস্থায় থাকার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত গত ২৮ জুলাই সৌদি আরবের একটি হাসপাতালের গেটে চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে মারা যান তিনি।
গ্রামবাসী জানান, একই গ্রামের প্রবাস ফেরত এক ব্যক্তির মাধ্যমে সাফিউল ও রনি নামের আরেক যুবক একসঙ্গে সৌদি আরব পাড়ি জমান। সঠিক কাগজপত্র না থাকায় দুজনেই বিপদে পড়েন। সাফিউল মারা গেলেও রনি এখনও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অভিযোগ জানানো হলেও ওই দালাল কোনো সহায়তা করেননি, বরং হুমকি দিয়েছেন এবং বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
সাফিউলের প্রতিবেশী মনির মিয়া বলেন, ‘দালালের প্রলোভনে পড়ে সাফিউল চরম মূল্য দিয়েছে। তার মতো আরও অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন। এই দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’
গাইবান্ধা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. নেশারুল হক জানিয়েছেন, মরদেহ দেশে আনতে পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি দালালের মাধ্যমে বিদেশে না যাওয়ার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।